Ulothrixএর জনন (Birth):
Ulothrix অঙ্গজ, অযৌন এবং যৌন জনন পদ্ধতিতে বংশবৃদ্ধি করে।
ক. অঙ্গজ বংশবৃদ্ধি (Organ Breeding):
খণ্ডায়নের মাধ্যমে এর অঙ্গজ বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। দৈবক্রমে মাঝখানে কেটে দেয়া হয়েছে।) ফিলামেন্টটি ভেঙ্গে কয়েকটি খণ্ডে পরিণত হলে প্রত্যেক খণ্ড কোষ বিভাজনের মাধ্যমে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে এক একটি নতুন Ulothrix রূপে আত্মপ্রকাশ করে।
খ. অযৌন জনন (Asexual reproduction):
জুষ্পের সৃষ্টির মাধ্যমে Ulothrix-এর অযৌন জনন সম্পন্ন হয়। কখনো কখনো অ্যাপ্লানোস্পোর সৃষ্টির মাধ্যমেও অযৌন জনন হয়ে থাকে। জুস্পোরগুলো সাধারণত চার ফ্ল্যাজেলা যুক্ত। যে কোষ হতে জুস্পোর উৎপন্ন হয় তাকে জুস্পোরাঞ্জিয়াম বলে। হোল্ডফাস্ট ছাড়া অন্য যে কোনো কোষ হতে জুষ্পের সৃষ্টি হতে পারে। প্রজাতির ওপর নির্ভর করে প্রত্যেক জুস্পোরাঞ্জিয়াম হতে ১ – ৩২টি জুস্পোর সৃষ্টি হয়। একটি মাত্র জুস্পোর সৃষ্টি হলে কোষের সম্পূর্ণ প্রোটোপ্লাস্টই একটি জুস্পোরে রূপান্তরিত হয়।
একাধিক জুস্পোর উৎপন্ন হলে জুস্পোরাঞ্জিয়ামের প্রোটোপ্লাস্ট একটু সংকুচিত হয় এবং লম্বালম্বিভাবে দু’ভাগে বিভক্ত হয়। প্রজাতির ওপর নির্ভর করে ৩২টি অপত্য প্রোটোপ্লাস্ট সৃষ্টি পর্যন্ত এই বিভাজন চলতে পারে। প্রতিটি অপত্য প্রোটোপ্লাস্ট তখন চার ফ্ল্যাজেলা যুক্ত জুস্পোরে রূপান্তরিত হয়। সরু কোষের প্রজাতি হতে সৃষ্ট সকল জুস্পোর একই প্রকার হয় কিন্তু মোটা কোষের প্রজাতি হতে দুই প্রকার জুস্পোর উৎপন্ন হয়। ক্ষুদ্রাকৃতির বা মাইক্রোজুস্পোর-এর আইস্পট মধ্যখানে থাকে এবং একটি জুস্পোরাঞ্জিয়াম হতে ৮-৩২টি জুস্পোর উৎপন্ন হয়। বৃহদাকৃতির বা মেগাজুস্পোর-এর আইস্পট সম্মুখভাগে থাকে এবং একটি জুস্পোরাঞ্জিয়াম হতে ১-৪টি জুস্পোর উৎপন্ন হয়। জুস্পোরগুলো নাসপাতি আকৃতির। একটি ভেসিকল দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় জুস্পোরগুলো জুস্পোরাঞ্জিয়াম প্রাচীরের গায়ে উৎপন্ন ছিদ্রপথে বের হয়ে আসে এবং ভেসিকলের অবলুপ্তির পর এরা মুক্তভাবে ভেসে বেড়ায়। ২-৬, দিন সন্তরণের (সাঁতার কাটার) পর জুস্পোরের ফ্লাজেলাযুক্ত মাথাটি কোনো জলজ বস্তুর সাথে আবদ্ধ হয়। আবদ্ধ হওয়ার পর এরা আস্তে আস্তে ফ্লাজেলাবিহীন হয়, এর চারদিকে একটি প্রাচীর গঠন করে এবং ক্রমে দীর্ঘ হয় ও বিভাজনের মাধমে নতুন Ulothrix ফিলামেন্ট সৃষ্টি করে। প্রতিকূল পরিবেশে জুস্পোরগুলো জুস্পোরাঞ্জিয়াম হতে নির্গত হয় না, অধিকন্তু এদের চারদিকে একটি প্রাচীর গঠন করে। অ্যাপ্ল্যানোস্পোরে পরিণত হয়।
কখনো কখনো কোনো একটি কোষের সম্পূর্ণ প্রোটোপ্লাস্ট গোলাকার হয় এবং চারপাশে একটি পুরু প্রাচীর গঠন করে অ্যাকাইনিটিতে পরিণত হয়। একে হিপনোস্পোরও বলা হয়। প্রচুর সঞ্চিত খাদ্য সম্বলিত যে স্পোরের মাধ্যমে জীব তার প্রতিকূল অবস্থা অতিক্রম করে তাকে রেস্টিং স্পোর বলে। অনুকূল পরিবেশে এরা এদের পুরু প্রাচীর বিদীর্ণ করে বের হয়ে আসে এবং অঙ্কুরায়ন ও বিভাজনের মাধ্যমে নতুন ফিলামেন্টে পরিণত হয়।
গ. যৌন জনন (Sexual reproduction):
Ulothrix একটি ভিন্নবাসী বা হেটেরোথ্যোলিক শৈবাল (স্ত্রী ও পুরুষ জননকোষ আলাদা দেহে উৎপন্ন হয়)। Ulothrix শৈবাল এর যৌন মিলন আইসোগ্যামাস। হোল্ডফাস্ট ছাড়া যে কোনো একটি কোষের প্রোটোপ্লাস্ট বিভাজনের মাধ্যমে ৮-৬৪টি অপত্য প্রোটোপ্লাস্ট সৃষ্টি করে। প্রতিটি অপত্য প্রোটোপ্লাস্ট একটি নাসপাতি আকৃতির বাইফ্ল্যাজিলেট গ্যামিটে রূপান্তরিত হয়। গ্যামিটগুলো জুস্পোর হতে ক্ষুদ্রাকৃতির। এদের আইস্পট অত্যন্ত স্পষ্ট।
একটি ভেসিকল দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় এরা জননকোষাধার বা গ্যামিটেঞ্জিয়াম (যে কোষ হতে গ্যামিট সৃষ্টি হয়)-এর প্রাচীরে সৃষ্ট ছিদ্রপথে বের হয়ে আসে এবং ভেসিকলের অবলুপ্তির পর মুক্তভাবে সাঁতরে বেড়ায়। দুটি ভিন্ন ফিলামেন্ট হতে দু’টি ভিন্নধর্মী (+,-) গ্যামিট দেহের বাইরে এসে যৌন মিলন সম্পন্ন করে এবং একটি চার ফ্ল্যাজেলাযুক্ত ডিপ্লয়েড (2n) জাইগোট সৃষ্টি করে।
জাইগোটের অঙ্কুরোদগমঃ জাইগোট কিছুকাল সচল থাকে, পরে ফ্ল্যাজেলাবিহীন হয়ে পুরু প্রাচীরবিশিষ্ট হয় এবং পরে বিশ্রামকাল কাটায়। বিশ্রামের পূর্বে এরা প্রচুর খাদ্য সঞ্চয় করে এবং চারদিকে একটি প্রাচীর সৃষ্টি করে। বিশ্রামকাল শেষে এতে মায়োসিস বিভাজন হয় এবং ৪-১৬টি হ্যাপ্লয়েড (n) জুস্পোর (প্রতিকূল অবস্থায় অ্যাপ্ল্যানাস্পোর) সৃষ্টি করে। জাইগোট প্রাচীর বিদীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে জুস্পোরগুলো (অথবা অ্যাপ্লানোস্পোর) বের হয়ে আসে এবং অঙ্কুরায়ন ও বিভাজনের মাধ্যমে নতুন উদ্ভিদে পরিণত হয়। Ulothrix এর জীবন চক্র Hanlantic অর্থাৎ বহুকোষী গ্যামিটোফাইটিক জনুর সাথে এককোষী স্পোরোফাইটিক জনুর জনুক্রম ঘটে।